নামাজের জন্য ১০ টি সূরা

নামাজের জন্য ১০ টি সূরা

নামাজের জন্য ১০ টি সূরা

Blog Article

নামাজের জন্য ১০ টি সূরা অন্যতম স্তম্ভ হলো নামাজ। নামাজ আদায়ের সময় কুরআন থেকে বিভিন্ন সূরা তিলাওয়াত করা হয়, যা নামাজের রুকন এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের মাধ্যম। সাধারণত ছোট ছোট সূরা গুলো নামাজের সময় বেশি পড়া হয়, যেগুলো সহজে মুখস্থ করা যায় এবং নামাজের খুশু-খুজু বজায় রাখতে সাহায্য করে। নিচে নামাজের জন্য ১০টি সূরা নিয়ে আলোচনা করা হলো:

১. সূরা আল-ফাতিহা (সূরা নম্বর ১)
সূরা আল-ফাতিহা নামাজের প্রত্যেক রাকাতে আবশ্যক তিলাওয়াত করতে হয়। এটিকে "উম্মুল কুরআন" বা কুরআনের মা বলা হয়। এই সূরার মাধ্যমে আল্লাহর প্রশংসা করা হয় এবং দোয়া করা হয় সঠিক পথে পরিচালনার জন্য।

অর্থ: "সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি বিশ্বজগতের পালনকর্তা, যিনি পরম করুণাময়, পরম দয়ালু। বিচার দিবসের মালিক। আমরা তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত কর। তাদের পথ যারা তোমার অনুগ্রহপ্রাপ্ত, যারা পথভ্রষ্ট নয়।"

২. সূরা আল-ইখলাস (সূরা নম্বর ১১২)
এই সূরাটি আল্লাহর একত্ববাদের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়। এটি খুব ছোট এবং সহজ, তাই অনেকেই এটি মুখস্থ করে নামাজে পড়ে থাকেন।

অর্থ: "বল, তিনি আল্লাহ, একক। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও কেউ জন্ম দেয়নি। এবং তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।"

৩. সূরা আল-ফালাক (সূরা নম্বর ১১৩)
এটি ক্ষতিকারক জিনিস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার একটি সূরা। নামাজের পাশাপাশি অন্যান্য সময়ও এটি পড়ার গুরুত্ব রয়েছে।

অর্থ: "বল, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি প্রভাতের প্রতিপালকের নিকট। তাঁর সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে। এবং অন্ধকারের অনিষ্ট থেকে যখন তা ছড়িয়ে পড়ে। এবং গ্রন্থিতে ফুঁ দেয়া জাদুকরিণীদের অনিষ্ট থেকে। এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে।"

৪. সূরা আন-নাস (সূরা নম্বর ১১৪)
এই সূরাটিও দুষ্ট জিন এবং মানুষের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করার জন্য।

অর্থ: "বল, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি মানুষের প্রতিপালকের নিকট। মানুষের অধিপতির নিকট। মানুষের প্রভুর নিকট। গোপনে কুমন্ত্রণা দানকারীর অনিষ্ট থেকে। যে মানুষের বুকে কুমন্ত্রণা দেয়। জিনের মধ্য থেকে এবং মানুষের মধ্য থেকে।"

৫. সূরা আল-কাওসার (সূরা নম্বর ১০৮)
এই সূরা ছোট এবং সহজ, কিন্তু এর অর্থ ও গুরুত্ব অনেক বেশি। আল্লাহর প্রদত্ত অগণিত নিয়ামতের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং তার জন্য কুরবানি দেয়ার ইঙ্গিত রয়েছে।

অর্থ: "নিশ্চয়ই আমরা আপনাকে কাওসার (প্রাচুর্য) দান করেছি। অতএব, আপনার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন। নিশ্চয়ই, আপনার শত্রুই নিঃসন্তান।"

৬. সূরা আল-মাউন (সূরা নম্বর ১০৭)
এই সূরা দয়া, সদাচার এবং মানুষকে সাহায্য করার গুরুত্বের উপর জোর দেয়।

অর্থ: "তুমি কি সেই ব্যক্তিকে দেখেছ যে দ্বীনকে মিথ্যা বলে? সে-ই তো অনাথকে তাড়িয়ে দেয় এবং মিসকিনকে খাবার দেয়ার কথা উৎসাহিত করে না। তাই দুর্ভোগ তাদের জন্য, যারা তাদের নামাজে উদাসীন। যারা লোক দেখানোর জন্য নামাজ পড়ে এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জিনিস দান করতে বিরত থাকে।"

৭. সূরা আল-আসর (সূরা নম্বর ১০৩)
এই সূরায় সময়ের গুরুত্ব এবং যারা ধৈর্যশীল এবং সত্যের পথে থাকে তাদের কল্যাণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

অর্থ: "শপথ সময়ের। নিশ্চয়ই, মানুষ ক্ষতির মধ্যে আছে। তবে তারা নয়, যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে, এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে ও ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে।"

৮. সূরা আন-নাসর (সূরা নম্বর ১১০)
এই সূরা বিজয়ের সময় আল্লাহর প্রশংসা এবং তার কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করার গুরুত্ব বোঝায়।

অর্থ: "যখন আল্লাহর সাহায্য এবং বিজয় আসবে এবং তুমি দেখবে মানুষ দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করছে, তখন তোমার প্রতিপালকের প্রশংসা সহকারে তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা কর এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই, তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল।"

৯. সূরা আল-হুমাজাহ (সূরা নম্বর ১০৪)
এই সূরাটি মন্দ কাজ, নিন্দা এবং কৃপণতার পরিণতির কথা বলে।

অর্থ: "দুর্ভোগ প্রত্যেক অপবাদকারী ও নিন্দাকারীর জন্য, যে সম্পদ সঞ্চয় করে এবং তা গণনা করে। সে মনে করে তার সম্পদ তাকে অমর করবে। না, তাকে অবশ্যই ভগ্নাংশে নিক্ষিপ্ত করা হবে।"

১০. সূরা কুরাইশ (সূরা নম্বর ১০৬)
এই সূরা কুরাইশদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহের স্মরণ করিয়ে দেয় এবং আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস রাখতে উৎসাহ দেয়।

অর্থ: "কুরাইশদের অভ্যস্ত করার জন্য। তাদের শীত ও গ্রীষ্মের সফরে অভ্যস্ত করার জন্য। তাই তারা এ ঘরের (কাবা) প্রভুর ইবাদত করুক, যিনি তাদের ক্ষুধায় আহার দিয়েছেন এবং ভীতিকর অবস্থায় নিরাপত্তা দিয়েছেন।"

উপসংহার:
এই ১০টি ছোট সূরা নামাজে পড়া খুবই সহজ এবং এতে কুরআনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর আলোকপাত করা হয়েছে। এগুলো মুখস্থ করা খুব সহজ এবং নিয়মিত নামাজে পড়লে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের পাশাপাশি জীবনের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পেতে সাহায্য করবে।





Report this page